আমরা সাধারণত আদিবাসী বা বিশেষকরে সাঁওতালি রান্নাকে খুব সু-নজরে দেখি না। কিন্তু মনে রাখতে হবে সাঁওতালদের বিপুল শক্তির উৎস কিন্তু ওদের খাদ্যাভ্যাস। ওরা খাদ্যের ব্যাপারে সম্পূর্ণ প্রকৃতি নির্ভর। আজ ওদের একটি অন্যতম সুস্বাদু রেসিপি উপস্থিত করছি।
পাকুড়গাছের কচি পাতার সঙ্গে সাধারণ কিছু উপকরণ দিয়ে সাঁওতালরা একধরনের ভর্তা তৈরি করে। সাঁওতালি ভাষায় যে খাবারের নাম ‘হিসাআরা জলিসাকামরে সিপি’। বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘কচি পাকুড়পাতার ভর্তা’। প্রসঙ্গত বলে রাখি,পাকুড় গাছ আর আশ্বস্ত গাছ ও গাছের পাতা প্রায় এক রকম দেখতে হলেও ওই দুটি একই গাছ নয়।
উপকরণ:
উপকরণ অত্যন্ত সাধারণ।একদম গ্রাম্য পরিবেশে যা পাওয়া যায়।
* কচি পাকুড়পাতা ১০০ গ্রাম, * শুকনো লঙ্কা ৬টি, *পেঁয়াজকুচি ১ কাপ,
* জল দেড় কাপ,
* লবণ ও সর্ষের তেল পরিমাণমতো
প্রণালী –
* প্রথমে বলে রাখি আদিবাসীরা সাধারণত মাটির পাত্রে রান্না করেন। তবে ইদানিং এলুমিনিয়াম বা হিনডেলিয়ামের পত্রেও রান্না ওরা করছে।
* প্রথম পর্ব – মাটির হাঁড়িতে জল ও পরিমাণমতো লবণ দিয়ে আগুনে ফোটাতে হবে। জল ফুটে উঠলে কচি পাকুড়পাতা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
দ্বিতীয় পর্ব – মাঝেমধ্যে ঢাকনা তুলে বাঁশের বা কাঠের খুনতি দিয়ে নেড়ে দিন। সম্পূর্ণ জল শুকিয়ে গেলে আগুন থেকে নামিয়ে রাখুন।
তৃতীয় পর্ব – আগুনে মাটির আরেকটি হাঁড়ি দিয়ে সামান্য সর্ষের তেল দিন। তেল গরম হলে শুকনা লঙ্কাগুলো দিয়ে ভেজে নিতে হবে।
চতুর্থ পর্ব – এবার একটি মাটির পাত্রে সেদ্ধ পাকুড়পাতা, ভাজা শুকনা লঙ্কা, কুচানো পেঁয়াজ ও সর্ষের তেল দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিতে হবে।
পঞ্চম পর্ব – এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে ‘হিসাআরা জলিসাকামরে সিপি’ বা ‘কচি পাকুড় পাতার ভর্তা’ । গরম ভাতের সঙ্গে এই ভর্তা খেতে পারেন।