তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যর সুর প্রথম থেকেই ছিল চড়া সুরে বাঁধা। তিনি একদিকে যেমন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন তেমনই অযাচিত ভাবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে এনে দেশের বিজেপিকেও হুমকি দিতে ছাড়েন নি। তারই প্রতিবাদে এবার দিল্লি পুলিশে তাঁর বিরুদ্ধে FIR করলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিনীত জিন্দাল। প্রসঙ্গত ২৮ তারিখের সভায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ মনে করছেন এটা বাংলাদেশ। বাংলায়(পশ্চিমবঙ্গ) যদি আগুন লাগান, কোনও রাজ্যই থেমে থাকবে না। বাংলায় আগুন লাগালে অসম থেমে থাকবে না। উত্তর-পূর্ব, উত্তর প্রদেশ থেমে থাকবে না। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও থেমে থাকবে না। আপনার চেয়ারটা আমরা টলমল করে দেব।” স্বাভাবিক কারণেই অপ্রাসঙ্গিকভাবে অন্য রাজ্যের কথা টেনে আনায় বেজায় ক্ষুব্ধ অন্যান্য রাজ্য।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যর পরেই উস্মা প্রকাশ করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন,”দিদি, আপনার এত সাহস হল কীভাবে যে অসমকে হুমকি দিচ্ছেন? আমাদের রক্তচক্ষু দেখাবেন না।” সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয় অন্যান্য রাজ্যের প্রশাসক। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এবং বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহা মমতার মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। এই নিয়ে সারা ভারতে গুঞ্জন তৈরী হয়। তখনই বোঝা গিয়েছিল যে কোনো একটা সমস্যা তৈরী হতে পারে। এবার মমতার বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিনীত জিন্দাল। বৃহস্পতিবার দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি লিখে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫২, ১৯২, ১৯৬ ও ৩৫৩ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে বিনীত জিন্দাল লিখেছেন, “দলের ছাত্র পরিষদের সভায় মমতা বলেছেন, বাংলা জ্বললে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লি জ্বলবে। এটা স্পষ্ট যে এই মন্তব্য প্ররোচনামূলক এবং রাষ্ট্রবিরোধী। বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক গ্রুপের মধ্যে হিংসা এবং ঘৃণা ছড়াতে পারে।” এখন দেখার এই নিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।