আমরা সকলেই জানি, মহাভারতের অন্যতম চরিত্র রজা শান্তনু পুত্র ভীষ্ম। ভীষ্ম চরিত্র প্রায় সমস্ত মহাভারত জুড়েই রয়েছে। তিনি ছিলেন ইচ্ছামৃত্যুর অধিকারী। কিন্তু কিভাবে তিনি এই ইচ্ছা মৃত্যুর বর পেলেন? কে, কেন তাঁকে এই বর দিয়েছিলেন? আজকে অমরা সেই প্রায় অজানা বা অল্পজানা কাহিনীর দিকে নজর দেবো।
মহাভারতের কাহিনী থেকে জানা যায়, একদিন হস্তিনাপুরের কুরুরাজ শান্তনু মৃগয়া করতে যমুনার তীরে গিয়েছিলেন। এমন সময় মৃগনাভির সুগন্ধিতে তিনি বিমোহিত হন। গন্ধের উৎস খুঁজতে খুঁজতে এক কুটিরে সত্যবতীকে দেখতে পান এবং তার পিতা ধীবরনেতা দাশরাজের কাছে বিবাহের প্রস্তাব রাখলে তিনি শান্তনুকে এক শর্ত দেন যেন তার কন্যার গর্ভজাত পুত্রেরাই পরবর্তীতে রাজা হবেন। দেবব্রত যেহেতু শান্তনুর প্রথম পুত্র তাই সত্যবতীর সন্তানদের কোনদিন রাজা হওয়ার সুযোগ আসবে না। স্বাভাবিক কারণেই দুশ্চিন্তায় কাতর শান্তনু। কিছুটা সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছেন।
পিতার কষ্ট দেখে দেবব্রতও ভীষণ কষ্ট পাচ্ছিল। পিতা তাকে কিছু না জানালেও তিনি এক মন্ত্রীর কাছ থেকে সমস্ত ঘটনা জানলেন। এরপর কালবিলম্ব না করে দাশরাজের কাছে পৌঁছান এবং পিতার জন্য সত্যবতীকে প্রার্থনা করেন। দাশরাজ পুনরায় তার শর্তের কথা জানান। প্রত্যুত্তরে রাজকুমার দেবব্রত প্রতিজ্ঞা করলেন যে তিনি কোনদিন রাজা হবেন না, এমনকি তিনি কোনদিন বিয়েই করবেন না ব্রহ্মচারী জীবন কাটাবেন। এই ভীষণ প্রতিজ্ঞার জন্য তার নাম হলো ভীষ্ম। ধীবর রাজ এই দুই শর্তে রাজি হয়ে রাজা শান্তনুর হাতে কন্যাদান করেন। রাজা শান্তনু খুশি হয়ে ভীষ্মকে স্বেচ্ছামৃত্যুর বর দিলেন। কুলগুরু প্রশ্ন তোলেন সেক্ষেত্রে যদি রাজকুমার সিংহাসনের অযোগ্য হয় তাহলে কি হবে? সেক্ষেত্রে ভীষ্ম আবার প্রতিজ্ঞা নিলেন, রাজা যেই হোক না কেন, তিনি সবসময় রাজ্যের কল্যাণে রাজা ও রাজ্যের পক্ষে থাকবেন।