আজ কৌশিকী অমাবস্যা। ভক্তপ্রাণ হিন্দু বাঙালির কাছে কৌশিকী অমাবস্যা খুবই পরিচিত। ওইদিন বাংলার বিভিন্ন কালী মন্দিরে ভক্তের ঢল নামে।এই বিষয়ে পুরান বলছে, অসুরকুলের দুই অসুর শুম্ভ-নিশুম্ভ যখন তপস্যা করেছিলেন, তখন ব্রহ্মার কাছ থেকে কৌশলে চেয়ে নেন দুটি বর – কোনো দেবতার হাতে মৃত্যু নয়, কেবল অযোনিসম্ভূতা নারীর হাতে মৃত্যু। এখন তারা এটা জানত অযোনিসম্ভূতা নারী একটি অবাস্তব ধারণা আর নারীর সাথে যুদ্ধে তারাই জিতবে। স্বাভাবিক কারণেই তারা ভাবলো ‘অযোনিসম্ভূতা’ কেউ হতে পারে না। তারা উল্লোসিত হয়ে স্বর্গ ও মর্ত্যলোকে প্রবল অত্যাচার শুরু করে। তাদের বর প্রাপ্তির একটি ফাঁক ছিল। তা হলো তাদের মৃত্যু হবে কেবল অযোনিসম্ভূতা কোনো নারীর হাতে।
অসুরদের অত্যাচার যখন বেড়েই চলেছে স্বাভাবিকভাবেই দেবতারা এসে মহাদেবের কাছে আর্জি জানান। এদিকে তখন পার্বতীর গায়ের রঙ কালো বলে কালিকা বলে যেই মহাদেব ডেকেছেন , ব্যস! অমনি রেগে গেলেন দেবী। চলে গেলেন মানস সরোবরে, আর দেহের সকল কালো কোষ নির্গমন করে হয়ে উঠলেন ফর্সা। আর ঐ কালো কোষগুলি থেকে জন্ম হল কৃষ্ণবর্ণের দেবী কৌষিকী। কোষ থেকে জন্ম – তাই কৌষিকী। তবে বানান বিভ্রাটের কারণে ‘কৌশিকী’ বলা হয়। বর অনুযায়ী ইনিই সেই নারী যিনি অযোনিসম্ভূতা। তাই শুম্ভ-নিশুম্ভ অচিরেই বধ হলেন এনার হাতে।
পুরান বলছে এই দিন ভক্তিভরে কয়েকটি কাজ করুন। তাহলে জীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে।
১) এই দিনে গঙ্গাস্নান করুন ৷ স্নান করে সূর্য দেবতাকে প্রণাম করুন।
২) দু’দিন উপোস রাখতে পারলে খুবই ভালো হয় ৷ সেটা না-পারলে এই দু’দিন ভুলেও আমিষ খাবেন না ৷
৩) তারা মায়ের পায়ে সিঁদুর ও লাল রক্তজবা নিবেদন করুন ৷
এই অমাবস্যা তিথিতে সন্ধের পর বাড়ির সদর দরজার সামনে দু’টি তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালান ৷
৪) এই তিথি চলাকালীন ঘরে এঁটো বাসন রেখে দেবেন না । ঘর পরিষ্কার রাখুন ৷
৫)দরিদ্র মানুষকে সামর্থ্য মতো কিছু দান করুন ৷