Tuesday, January 21, 2025
Homeখবরধর্মকথা সংবাদ- উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটে 'মা শ্যামসুন্দরীর মন্দির'- কিংবদন্তি

- Advertisment -

ধর্মকথা সংবাদ- উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটে ‘মা শ্যামসুন্দরীর মন্দির’- কিংবদন্তি

 

বাংলাদেশ মানেই মঠ ও মন্দিরের জায়গা। এখন কলকাতা গড়ে উঠেছে এক মহানগরী। কিন্তু কয়েকশো বছর আগেও কলকাতা ছিল জঙ্গলে পূর্ণ। তখন থেকেই কলকাতায় তৈরী হয়েছিল প্রচুর মন্দির। আজকে আমাদের আলোচনা উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটে মা শ্যামসুন্দরীর মন্দির নিয়ে। এখানের আরাধ্যা দেবী মা কালী। ।কালী এখানে পূজিতা ছোট্ট মেয়ে রূপে। তাই অম্ববাচি পালিত হয় না এই মন্দিরে। বলির কোনও রীতি নেই। পুরোপুরি নিষিদ্ধ মাছ, মাংস। ভক্তদের বিশ্বাস, কাউকে কক্ষণও খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না শ্যামসুন্দরী। ভক্তে কাতর প্রার্থনায় ঠিক সাড়া দেন তিনি, পূরণ করেন মনবাঞ্ছা। মন্দিরের বেদীতে আছেন মা শ্যামসুন্দরী। তাঁর গা ঘেঁসেই বসে রয়েছেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। তাঁরা দেবীর সন্তান ‘পাহারাদার’ও। শ্যামসুন্দরী পাশের ঘরেই রয়েছেন ভৈরব। এই মন্দিকে ঘিরে তৈরী হয়েছে অনেক গল্প ও কিংবদন্তি।

শ্যামসুন্দরীকে ঘিরে প্রচলিক আছে বহু অলৌকিক কাহিনী। তার মধ্যে একটি প্রচলিত কাহিনী সকলের মুখেই শোনা যায় যে, একবার দেবীর পুজোর জন্য পুরোহিত বাজার করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি লক্ষ্য করেছিলেন যে এক পাঁচ বছরের বালিকা গায়ে কালো রং, চোখে লাল রং মেখে দেবী কালীর মত সেজে সবার কাছে ভিক্ষা চাইছে। দেবী শ্যামসুন্দরীর পুরোহিতের কাছেও সেই বালিকা ভিক্ষে চেয়েছিল। বলেছিল যে, একটা টাকা দিতে। কারণ, সে দু’দিন ধরে কিছু খায়নি। কিন্তু, পুরোহিতের এসব ভালো লাগেনি। তিনি ওই বালিকাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলেন। পালটা বলেছিলেন, যা কাজ করে খা। জবাবে বালিকাটি বলেছিল, কাজ না-পেয়েই সে ভিক্ষে চাইছে। এর পর চলে গিয়েছিল ওই ছোট্ট মেয়েটি। পুরোহিতও দেবীর পুজোর জন্য বাজার করে ফিরে এসেছিলেন মন্দিরে। দেবীর ভোগের ব্যবস্থা হয়েছিল। প্রচুর ভক্তের সমাগমও হয়েছিল অমাবস্যার সে রাতে।

নিয়ম মেনে অন্ধকারেই চলছিল দেবীর আরাধনা। পুজো চলাকালীন পুরোহিত হঠাৎ লক্ষ করেন যে শুধু মহাদেবই শায়িত রয়েছেন। কিন্তু, তাঁর ওপর কালী নেই। প্রথমে ভ্রম মনে হলেও পরে ঘি-এর প্রদীপ বাড়িয়ে মূর্তি দেখার চেষ্টা করেন এবং একই জিনিস দেখেন। তৎক্ষণাৎ নূপুরের শব্দে সম্বিত ফেরে পুরোহিতের। শোনা যায় সে দিনই সয়ং শ্যামাসুন্দরী জানান দিয়েছিলেন তাঁর অস্তিত্বের কথা, ফের খেতে চেয়েছিল চালকলা। সকালে ছোট্ট মেয়ে রূপে যে তিনিই খাবার চাইতে এসেছিলেন সে কথাও জানিয়েছিলেন পুরোহিতকে। সেই থেকেই চলছে রীতি। চালকলা দিয়ে শ্যামসুন্দরীর পুজোর আয়োজন হয় আজও। সাজতে ভালবাসেন শ্যামসুন্দরী । তাই রোজই রকমারি ফুলের গহনা আর শাড়িতে সাজেন দেবী, নিখুঁত হাতে তাঁকে সাজিয়ে তোলেন পুরোহিতরা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Most Popular

Recent Comments