Wednesday, March 19, 2025
Homeখবরপুরান সংবাদ: শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি মাহাত্ম্য

- Advertisment -

পুরান সংবাদ: শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি মাহাত্ম্য

 

বাঁশি ছাড়া শ্রীকৃষ্ণকে আমরা ভাবতেই পারি না। শ্রীকৃষ্ণ ও বাঁশি যেন সমার্থক। কিন্তু কিভাবে ও কেন শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলো এই বাঁশি ? কিভাবে তৈরী হলো এই বাঁশি-মাহাত্ম্য! এই বিষয়ে একদিকে আছে পুরানের এক গল্প ও অন্য দিকে বাঁশি হলো পরমাত্মার প্রতীক।

কৃষ্ণ তখন নিতান্তই ছোট। মাঠে ঘাটে খেলে বেড়ায় বন্ধুদের সঙ্গে। একদিন হঠাৎ এক বৃদ্ধ বাঁশি বিক্রেতার বাঁশি বাজানো শুনে শিশু কৃষ্ণ একদম মোহিত হয়ে যায়। সে দ্রুত ছুটে যায় তাঁর কাছে। আর দাবি করে তাকে বাঁশি বাজানো শেখাতে হবে। কিন্তু বৃদ্ধ বলেন, তুমি খুব ছোট, তুমি পারবে না বাঁশি বাজাতে। তখন শ্রীকৃষ্ণ কেঁদে ফেললেন এবং বললো আমি পারবো দয়া করে আমাকে শিখিয়ে দিন। এই অপূর্ব লীলা বিলাস দেখে স্বর্গের সমস্ত দেব দেবী হাসছিলেন। এই ভেবে হাসছিলেন,যার কাছে সবকিছু নতজানু, তিনি বাঁশি শেখার জন্য কাঁদছেন।বৃদ্ধ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এর এই আঁকুতি শুনে খুব দয়া হলো। তারপর বৃদ্ধ বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমাকে শিখাবো। তখন শ্রীকৃষ্ণ খুবই আনন্দিত হলেন। বৃদ্ধ লোকটি শ্রীকৃষ্ণ এর হাতে একটি বাঁশি দিলেন এবং বললেন, আমি যেভাবে বাজাবো তুমিও ঠিক সেইভাবে বাঁশি বাজাবে। শ্রীকৃষ্ণ বললেন, ঠিক আছে। বৃদ্ধ যখনই বাঁশিতে ফু দিলেন, তখনই শ্রীকৃষ্ণ বাঁশিতে ফুঁ দিলেন। শ্রীকৃষ্ণ যখন বাঁশি সুর তুললেন, সেই সুর শুনে সমস্ত দেবদেবী, সমস্ত জীব জগৎ বিমোহিত হয়ে গেল। দেব দেবী পুস্প বৃষ্টি করতে লাগল। তখন বৃদ্ধ লোকটি ভাবলেন, এ কোন সাধারণ বালক নয়।। শ্রীকৃষ্ণ বাঁশি বাজাচ্ছিলেন, সেই সময় বৃদ্ধ লোকটি তার চরনে শুয়ে পড়লেন। সেই থেকেই কৃষ্ণের হাতে বাঁশি।

অন্যদিকে এই বাঁশি হলো আত্মা ও পরমাত্মার মিলনের সেতু। বাঁশি যেরকম ভিতরে ফাঁপা হয়, এবং বাঁশিবাদকের বায়ু চালনার সাথে তার মধ্যে সুরের সৃষ্টি হয়, তেমন প্রকৃত ঈশ্বর ভক্তের অন্তরও হয় এরকম আত্ম-অহংকারহীন ও শূন্য, যার নিজস্ব কিছুই থাকে না, যে শুধু মাত্র ঈশ্বরের ইচ্ছার কাছে নিজেকে সমর্পন করে এবং স্বয়ং তাঁর ইচ্ছার দ্বারা পরিচালিত হয়। বাঁশিতে যেমন একটি মাত্র দিক খোলা অবস্থায় থাকে, তেমনই একজন প্রকৃত ভক্তের মনের দ্বার শুধু মাত্র পরমাত্মার প্রতিই উন্মুক্ত থাকে। তাই শ্রী কৃষ্ণ বাঁশিকে সর্বদা নিজের অঙ্গ বদ্ধ রাখেন। সকল গোপিকা তথা রাধারাণীর অত্যন্ত ঈর্ষার বস্তু ছিল শ্রীকৃষ্ণের এই বাঁশি।

শ্রীকৃষ্ণ তিন প্রকারের বাঁশী ব্যবহার করেন। তার একটিকে বলা হয় বেণু, অন্যটি মুরলী এবং তৃতীয়টি বংশী। শ্রীকৃষ্ণের বাঁশিতে শুধু মাত্র রাধারানীই পাগলিনী ছিলেন না। ব্রজ ভূমি থেকে শুরু করে, পশু পাখি কীটপতঙ্গ তথা সকল গ্রামবাসী বিভোর থাকতেন এই সুরে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Most Popular

Recent Comments