ভারতীয় পুরানের একাধিক কাহিনী আছে। অনেক পুরান বলে যে বিষ্ণুর ২২ অবতার। তবে সাধারণভাবে আমরা বিষ্ণুর দশ অবতারের কথাই জানি। আমাদের আজকের প্রতিবেদন, সেই দশ অবতার।
অধিকাংশ পুরান মতে বিষ্ণুর –
* প্রথম অবতার মৎস্য। পুরাণ অনুযায়ী, পৃথিবীর প্রথম মানুষ মনুকে এক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ভগবান বিষ্ণু মৎস্য রূপে আবির্ভূত হতে হয়েছিল।
* দ্বিতীয় অবতার ছিলেন কূর্ম। সত্যযুগে এই অবতার রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন সমুদ্র মন্থনের সময়। মন্থনকালে মন্দার পর্বত সমুদ্রের নীচে ডুবে যাচ্ছিল। তাই সেই সময় বিষ্ণু কূর্ম অবতার রূপে অর্থাৎ কচ্ছপের রূপ নিয়ে মন্দার পর্বত ধারণ করেছিলেন।
* তৃতীয় অবতার হলেন বরাহ। ভগবান বন্য শূকরের রূপ নিয়ে সত্যযুগে আবির্ভূত হয়েছিলেন। পুরাণ অনুযায়ী, পৃথিবীকে হিরণ্যাক্ষ নাম মহাশক্তিশালী অসুরের হাত থেকে রক্ষা করতেই তাঁর মর্ত্যে আসা।
* বিষ্ণুর চতুর্থ অবতার রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন নৃসিংহ বা নরসিংহ। সত্যযুগের এই অবতার দেহ মানুষের মতো আর মাথা সিংহের মতো। হিরণ্যাক্ষের ভাই হিরণ্যকশিপুকে দমন করতে তিনি আবির্ভূত হন।
* পঞ্চম অবতার রূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন বামন। অসুর বলিকে দমন করার জন্য তিনি বামন রূপ নিয়েছিলেন।
* বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার রূপে আবির্ভূত হন পরশুরাম। তিনি ছিলেন ত্রেতা ও দ্বাপর যুগ মিলিয়ে। ব্রাহ্মণ জমদগ্নি ও ক্ষত্রিয় রেণুকার পুত্র।
* বিষ্ণুর সপ্তম অবতার ছিলেন রামচন্দ্র। ত্রেতাযুগে তিনি অবতীর্ণ হন। অযোধ্যার রাজা দশরথ ও কশল্যার পুত্র ছিলেন তিনি। লঙ্কাধিপতি রাবণের অত্যাচার থেকে ধরিত্রীকে রক্ষা করতে তিনি এসেছিলেন।
* বিষ্ণুর অষ্টম অবতার ছিলেন কৃষ্ণ। দ্বাপর যুগে অন্যায়, অধর্মের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে কৃষ্ণের আবির্ভাব। তিনিই ছিলেন সম্পূর্ণ অবতার। আবার তাঁকে পূর্ণ অবতারী অর্থাৎ বিষ্ণুর পূর্ণরূপ বলে মনে করা হয়।
* বিষ্ণুর নবম অবতার হলেন গৌতম বুদ্ধ। কলি যুগে অবতীর্ণ হন তিনি। এই অবতার নিয়েও নানা মতভেদ আছে। তবে বুদ্ধকে মহারাষ্ট্র ও গোয়ায় বিভিন্ন মন্দিরে বিষ্ণুর নবম অবতার রূপে মানা হয়।
* আর বিষ্ণুর দশম ও শেষ অবতার হলেন কল্কি। কলি যুগের শেষে তাঁর আবির্ভাব হবে বলে মনে করা হয়। পুরাণ মতে, সাদা ঘোড়ায় তলোয়ার হাতে তিনি আবির্ভূত হবেন।