ভারতীয় পুরান হলো অজস্র গল্প-গাথায় ভরা একটা প্রাচীন সংকলন। পুরান বলে ব্রহ্মা স্বয়ম্ভু। অর্থাৎ তাঁর কোনো স্রষ্ঠা নেই। তিনি নিজেই নিজের সৃষ্টি কর্তা। সেই ব্রহ্মা নিজের একাকীকত্ব কাটানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। তখন তার মুখ থেকে সৃষ্টি হয় এক পরমা সুন্দরী নারী – সরস্বতী। সেই অর্থে ব্রহ্মা সরস্বতীর পিতা। কিন্তু ব্রহ্মা সরস্বতীকে সৃষ্টি করেছিলেন একাকীকত্ব কাটানোর জন্য। সরস্বতীর অপরূপ সৌন্দর্যে ব্রহ্মা কামাতুর হয়ে পারেন। সরস্বতী নিজেকে বাঁচানোর জন্য চারিদিকে লুকিয়ে পারেন। যেদিকেই সরস্বতী যায়, সেদিকেই ব্রহ্মার একটি মুখ তৈরী হয়। ফলে সরস্বতী কিছুতেই ব্রহ্মার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেন না।
পুরনের একটি কাহিনী বলছে তখন সরস্বতী এক রাজহংশীর বেশ ধরে আকাশের উড়ে যায়। এই রাজহংশীর উড়ে যাওয়াকেই ভারতীয় পুরানে ‘আকাশ গঙ্গা’ বলা হয়। আকাশ গঙ্গা হয়েও সরস্বতী পালতে পারে নি। ব্রহ্মা তখন একটি রাজ হাঁসের রূপ ধরে তার পিছনে উড়তে থাকে। অবশেষে সরস্বতী বাধ্য হয়ে আত্মাসমর্পন করেন ব্রহ্মার কাছে। পুরানের এক কিংবদন্তি অনুযায়ী সেই রাজহংশী ও রাজহাঁসের মিলনেই জন্ম হয় প্রথম মানুষ – যে মনু নামে পরিচিত।