‘অক্ষয়’ শব্দের অর্থ যার ক্ষয় হয় না। তাই ভারতীয় পুরানের বিশ্বাস অক্ষয় তৃতীয়া এমনই এক তিথি, সেইদিন যে কাজে হাত দেওয়া হয়, তাতে সাফল্য আসে – ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের এই তিথি সেই নিরিখে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বৈদিক বিশ্বাস, এই তিথিতে যা কিছু হয়, তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। এই তিথিতে অনেক মহত কাজ হয়েছে বলেই এই তিথি হিন্দু ভারতীয়দের কাছে খুবই শ্রদ্ধার তিথি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক অক্ষয় তৃতীয়ায় কোন কোন স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছে।
•বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার হিসেবে মর্ত্যে আবির্ভুত হয়েছিলেন ভগবান পরশুরাম। অর্থাৎ পরশুরাম জন্ম নিয়েছিলেন এই দিনে।
• এদিন থেকেই ত্রেতা যুগের সূচনা বলে ধরা হয়। সত্যযুগের শেষ হয়ে প্রতি কল্পে ত্রেতা যুগের সূচনা হয় অক্ষয় তৃতীয়া থেকে।
• রাজা ভগীরথ এই বিশেষ তিথিতে গঙ্গাদেবীকে মর্ত্যে এনেছিলেন বলে ধর্মীয় বিশ্বাস।
• আর আমাদের দুই মহাকাব্যের অন্যতম মহাভারত রচনা শুরু হয়েছিল এই পুণ্য তিথি থেকে। সিদ্ধাদাতা গণেশ লিপিবদ্ধ করেছিলেন মহাঋষি বেদব্যাসের মুখনিঃসৃত বাণী।
• হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস এদিনই দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব ঘটে। শস্যশ্যামলা বসুন্ধরা হয়ে ওঠে পৃথিবী।
• এই পূণ্যতিথিতে কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন।
• এদিন কুবেরের লক্ষ্মীলাভ হয়েছিল বলে বৈভব লক্ষ্মীর পূজো করা হয়।
আবার এই পূণ্যতিথিতেই দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে গিয়েছিলেন। শরণাগতের পরিত্রাতা হিসেবে দ্রৌপদীর লজ্জানিবারণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।
• আবার এদিন থেকেই শুরু হয় পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে রথ নির্মাণ।
• কেদার, বদ্রী, গঙ্গোত্রী- যমুনোত্রীর যে মন্দির ছ-মাস বন্ধ থাকে তার দ্বারোদ্ঘাটন হয় এই পূণ্যতিথিতেই। দ্বার খুললেই দেখা যায় অক্ষয়দ্বীপ প্রজ্জ্বলিত রয়েছে।
• আর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চন্দনযাত্রা শুরু হয় এই তিথি থেকে।
তাও অক্ষয় তৃতীয়ার সঙ্গে হিন্দু -ভারতীয় ধর্মের সম্পর্ক খুবই নিবিড়।