রামায়ণ হলো আর্য সভ্যতার ও পৃথিবীর প্রথম মহাকাব্য। এই মহাকাব্যের ব্যাপ্তি মহাভারতের মতো নয়, কিন্তু এর মধ্যেও আছে অনেক ছোট ছোট উপ-কাহিনী। তেমনই কয়েকটি অজানা উপ-কাহিনী এখানে আমরা বিবৃত করা হবে।
১) রঘুবংশের গুরু মহর্ষি বশিষ্ঠ দশরথের জ্যৈষ্ঠ পুত্রের নামকরণ করেন রাম। তিনি বলেন ‘রাম’ নাম মস্তিষ্ক, শরীর ও আত্মাকে শক্তি প্রদান করে। শিব বলেছিলেন যে, তিন বার রাম নাম উচ্চারণ করলে হাজার দেবদেবীকে স্মরণ করার সমান ফল পাওয়া যায়। আপনিও জেনে চমকে যাবেন যে শিব স্বয়ং ধ্যানমগ্ন অবস্থায় রাম নাম জপ করেন।
২) বজরংবলীর সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন রাম। পুরাণ অনুযায়ী ঋষি বিক্রামাদিত্য রামকে কাশীর রাজা য়ায়াতির বধের আদেশ দেন। প্রাণ রক্ষার জন্য কাশীরাজের ডাকে রণক্ষেত্রে নামেন বজরংবলী। রাম ও হনুমানের মধ্যে জোর যুদ্ধ বাঁধে। হনুমান রাম নাম জপ করতে থাকেন, যে কারণে রামের কোনও প্রহারই বজরংবলীর শরীরে আঁচড় কাটে না। অবশেষে রাম নিজের পরাজয় স্বীকার করেন।
৩) দেবী মহামায়ার সামনে বলি দেওয়াপ উদ্দেশে রাম ও লক্ষ্মণকে অপহরণ করেন অহিরাবণ। কিন্তু অহিরাবণের হত্যা করে তাঁদের উদ্ধার করেন বজরংবলী।
৪) মন্থরার কুপরামর্শে কৈকীয় দশরথের কাছে বর চেয়ে রাবণকে ১৪ বছরের বনবাসে পাঠান, এই তথ্য সকলেরই জানা। তবে অনেকে জানেন না যে রামকে বনবাসে পাঠিয়ে মন্থরা নিজের প্রতিশোধ তোলেন। পুরাণ অনুযায়ী একদা রাম খেলার সময় নিজের খেলনা দিয়ে ভুল করে মন্থরার কুঁজো পিঠে আঘাত করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মন্থরা ও এর প্রতিশোধ তোলার প্রতিজ্ঞা করেন। নিজের প্রতিজ্ঞা পূরণের জন্যই কৈকেয়ীকে ব্যবহার করে রামকে ২৪ বছরের বনবাসে পাঠান তিনি।
৫) প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী কাঠবিড়ালীর পিঠে যে সাদা-কালো লম্বা দাগ সেটি আসলে রামের আঙুলের দাগ। সেতু বন্ধনের সময় কাঠবিড়ালীও যথাসাধ্য সাহায্য করে। তাদের এই চেষ্টা দেখে রাম মুগ্ধ হন ও কাঠবিড়ালীকে হাতে তুলে তার পিঠে আদর করেন। মনে করা হয় তখন থেকেই কাঠবিড়ালীর পিঠে সাদা-কালো দাগ পড়ে।