অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সাপের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে , দেওয়ালে ধরেছে বড় বড় ফাটল , ঘরের চালা উড়ে গিয়েছে , অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের চারিদিক ভরেছে জঞ্জালে , সিকেয় উঠেছে পড়াশোনা , উদাসীন প্রশাসন ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা , দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রশাসনের ।
এটা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নাকি ভুতুড়ে ঘর প্রাথমিকভাবে দেখে বোঝার উপায় নেই । পড়াশোনা লাটে উঠেছে, রীতিমতো ক্ষুব্ধ এলাকার সাধারণ মানুষরা । বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী ব্লকের রাধামোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সমিতিমানা গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বর্তমানে এমনই ছবি উঠে এল আমাদের ক্যামেরায় । স্থানীয়দের দাবি , দীর্ঘ চার বছর ধরে একেবারে বেহাল হয়ে পড়েছে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি । এই মুহূর্তে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি সাপের আঁতুঘরে পরিণত হয়েছে । দেওয়ালে তৈরি হয়েছে বড় বড় ফাটল । অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে জঞ্জালে ঢেকে গিয়েছে । যে কোন মুহূর্তেই ঘটতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা, এই আশঙ্কা করে পড়ুয়াদের অভিভাবকরা ছেলে মেয়েদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পড়াশোনা করতে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন । এখন কবে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সংস্কার হয় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষরা । এই মুহূর্তে অঙ্গওয়াড়ী কেন্দ্রের কর্মীদের কখনো পাশের বাড়িতে রান্নাবান্না করতে হয় আবার কখনো এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাশে থাকা নিত্যানন্দপুর কলোনি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের মিড ডে মিলে রান্নাবান্না করতে হচ্ছে । এভাবেই দীর্ঘ চার বছর ধরে চলে আসছে এই অঙ্গনারী কেন্দ্র । নির্দিষ্ট জায়গা না থাকাতে পড়াশোনা প্রায় বন্ধের মুখে ।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমনি কল্পনার সমাদ্দার জানান , দীর্ঘ চার পাঁচ বছর ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, কিন্তু তার পরেও কোন কাজ হয়নি । তাই দ্রুত একটি নতুন বিল্ডিং তৈরি করা হলে ভালো হয় ।
মৃণাল দাস, মৌসুমী দাস নামের অভিভাবকরা জানান , লোকের বাড়িতে রান্নাবান্না করতে হয়, অনেক সময় আমাদেরকে খাবার না নিয়েই ঘুরে যেতে হয় । আতঙ্কের কারনে ছেলেমেয়েদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি । তাই দ্রুত এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি সংস্কার করা হোক ।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বেহাল দশা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন সোনামুখী বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামী । তিনি বলেন , অনেকগুলি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নিয়ে আমি বিধানসভায় প্রশ্ন তুলেছি কোথাও কিছু হচ্ছে না । শিশুদের খাবার নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে,তাছাড়া স্বাস্থ্য দপ্তর শেষ হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবাংলায় । শুধু এখানে নয় পশ্চিম বাংলার সব জায়গাতেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গুলির এমন অবস্থা বলে জানান তিনি ।
অন্যদিকে এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন সোনামুখী ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুশল বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন , বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে অ্যাকশন প্ল্যানে রাখা হয়েছে, টাকা এলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে ।