বাংলা শিল্প সাহিত্যের সঙ্গে কিন্তু উশ্রীর ঝর্নার বেশ নিবিড় সম্পর্ক আছে। ছোটবেলায় কমবেশি আমরা সবাই রবীন্দ্রনাথের সহজপাঠে উশ্রীর ঝর্নার সাথে পরিচিত হয়েছি। আবার সত্যজিতের প্রফেশরশ্নাকু তো মাঝে মাঝেই যেতেন সেই ঝর্না আর জঙ্গলের সন্ধানে। এবার চলুন এই বর্ষায় বা পুজোতে আমরাও ঘুরে আসি উশ্রী। ঝাড়খণ্ডের গিরিডি জেলাতেই রয়েছে উস্রি। আগের মতো তার রূপ দেখতে আর দূরদূরান্ত থেকে বাঙালিরা ছুটে আসেন না। শীতকালে স্থানীয় লোকজন পিকনিকে আসেন। বর্ষা ও শীতে কখনও কখনও কলকাতার উৎসাহী পর্যটক পাড়ি দেন সেখানে। তবে সেই সংখ্যাও হাতেগোনা। কিন্তু বর্ষায় তার রূপ ও উদ্দামতা দেখে আপনি মুগ্ধ হবেন। সবচেয়ে বড় কথা, হাতে যদি মাত্র একটা দিন সময় থাকে, তা হলেও উশ্রী নদীর ঝর্না দেখে সেই দিনেই কলকাতা ফেরা যায়। আর যদি ছুটি একটু বাড়িয়ে নিতে পারেন, ঘুরে নেওয়ার অনেক জায়গা আছে। আশেপাশে আছে অনেক দর্শনীয় জায়গায় – যা আপনার ভালো লাগবে।
চারিদিকে সবুজ বনের বুক চিরে চলে গেছে একটা ঝকঝকে পিচের রাস্তা। সেই রাস্তা ধরেই গাড়িতে বা বাসে আপনি সহজেই পৌঁছে যাবার উশ্রী। উশ্রীর জলধারা নেমে আসে পাহাড়ের বুকে দুই জায়গা দিয়ে। অবশ্য পাহাড় বললে ভুল হয়। তার চেয়ে টিলা বলাই ভাল। চারপাশে অজস্র পাথর ছড়ানো। সেই পাথরেও চোখ পড়ে জলের ক্ষয়কাজের অপূর্ব রূপ। তবে বর্ষায় যদি টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হয়, তবে উশ্রী বয়ে যায় গিরিখাত ছাপিয়ে। বর্ষায় তার ‘যৌবনমত্ত’ রূপ।
যাওয়া, থাকা – উশ্রী একাধিক দিক দিয়ে যাওয়া যায়। ধানবাদ গিয়ে সেখান থেকে গাড়ি করে উশ্রী ঘুরতে পারেন। আবার গিরিডি পৌঁছেও ঘুরে নিতে পারেন উশ্রীর ঝর্না। হাওড়া থেকে ভোরে হাওড়া-রাঁচি শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরে ধানবাদ গিয়ে, গাড়ি করে উস্রি ঘুরে নিতে পারেন। নাহলে গিরিডিতে থেকে উশ্রী ঘুরে নিতে পারেন। গিরিডি ও ধানবাদে নানা দামের ও মানের হোটেল আছে।